বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন এবং সাথে জেনে নিন বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন ও কিভাবে এর থেকে যথাযথ উপকার পাওয়া যায়। অনেকের অজানা "বাসক পাতা" কি এবং কোথায় পাওয়া যায় বা এর কাজ কি? বাসক পাতা বা বাসক গাছ সম্পর্কে সমস্ত তথ্য নিয়ে এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে।
বসন্তকালে বাসক গাছের সাদা ফুল, হলদে লাল ও তামাটে রংয়ের দেখা যায়।
বাসক ফুলের সৌন্দর্য যেমন আমাদের মুগ্ধ করে, তার চেয়েও অনেক বেশি
স্তম্ভিত করবে বাসক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে। কারণ বাসক পাতাতে রয়েছে
হাজারো রোগের সমাধান। আসুন আমরা জেনে নেয়, বাসক উদ্ভিদ সম্পর্কে
বিস্তারিত।
সূচিপত্রঃ বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন
- বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন
- বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা
-
বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন
- বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম
- বাসক পাতার কোথায় পাবেন ?
-
বাসক পাতার পুষ্টিগুণ
-
বাসক পাতার চা এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
-
বাসক পাতার সিরাপ এর উপকারিতা
-
বাসক পাতার সতর্কতা
-
বাসক পাতার অপকারিতা
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন
বাসক পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষের জন্য, এই উদ্ভিদ প্রাচীনকাল থেকেই
মানুষের বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে এটি
অত্যন্ত কার্যকারী, ভেষজ ঔষধ যা ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা
দূর করতে। এই উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম "". সাধারণত এটি লোকালয়ে জন্মাতে
দেখা যায়। তাজা পাতা অথবা শুকনো পাতা উভয় বিভিন্ন রোগের
চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। বাসক পাতায় "ভার্সিনিন" নামক ক্ষারীয় পদার্থ
এবং তেল থাকে যা বিভিন্ন রোগের উপশমে কাজ করে।
প্রাচীনকাল থেকেই ভেষজ গুনে গুণান্বিত এই বাসক পাতার ব্যবহার জানলে, আপনি এই
উদ্ভিদ থেকে যথাযথ উপকার পাবেন। বাসক পাতার গুনাগুন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। বাসক
পাতা কাঁচা খেলে সাথে সাথে মানুষের শরীরে কাজ করতে শুরু করে। এই আর্টিকেলটিতে
বাসক পাতার বিভিন্ন উপকারিতা খাওয়ার নিয়ম, অপকারিতা এবং সতর্কতা সাথে
কোথায় পাবেন জেনে নিন। নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হল।
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা
বাসক পাতার উপকারিতা প্রচুর তবে এখানে ১৫ টি উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা
অত্যন্ত কার্যকরী। প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার
হলেও নিয়ম জেনে আপনি নিজেই ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে এর থেকে যথাযথ উপকার
পেতে পারেন। তার জন্য প্রথমে উপকারিতা গুলো জেনে নিয়ম অনুসারে ব্যবহার বা খেতে
হবে। তাই আসুন আমরা জেনে নেয়, কার্যকরী উপকারিতা।
- জ্বরে বাসক পাতাঃ শরীরে জ্বর হলে অবশ্যই বাসক পাতার ব্যবহার করুন। কারণ শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বাসক পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। জ্বর দ্রুত সময় সারাতে পারে এই বাসক পাতায়। জ্বর হলে বাসক পাতা এক চামচ মধু, এক চামচ তুলসী পাতার রস সাথে এক চামচ বাসক পাতার রস খেলে দ্রুত জ্বর ভালো হয়।
-
শ্বাসকষ্টে বাসক পাতাঃ শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থাকলে নিয়মিত বাসক
পাতার রস খেতে পারেন। এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করে দিতে পারে এই বাসক
পাতা। হাঁপানির সমস্যা বা যেকোনো ধরনের শ্বাসকষ্টে এই বাতাস সেবন করুন।
-
সর্দি কাশি ভালো করে বাসক পাতাঃ বাসক পাতার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু
মিশিয়ে খেলে না বাচ্চাদের ও বড়দের ক্ষেত্রেই সর্দি কাশি ভালো হয়।
দীর্ঘদিনের কাশির সমস্যা থাকলে দুই থেকে চারটি বাসক পাতা রস প্রতিদিন
সেবন করলে খুব দ্রুত সর্দি কাশি ভালো হয়।
-
কফ প্রতিরোধ করে বাসক পাতাঃ দীর্ঘদিনের জমে থাকা কফ বের করতে সাহায্য করে। যে
সকল মানুষের কফ ওঠেনা, তাদের জন্য বাসক পাতার রস এক চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে
কিছুদিন সেবন করুন।
-
গলা ব্যথায় বাসক পাতাঃ সর্দি কাশি অথবা যে কোন কারনে গলা ব্যথা হলে
বাসক পাতার রস খেতে পারেন। এতে গলা ব্যথা ভালো হবে।
-
যক্ষা রোধে বাসক পাতাঃ বাসক পাতা অত্যন্ত কার্যকরী যক্ষা রোগীদের জন্য
কারণ এই রোগ মুক্তি করতে পারে বাসক পাতা। বাসক পাতায় অ্যান্টি
মাইক্রোবাল রয়েছে যাবার যক্ষা সারাতে সাহায্য করে।
-
প্রসাব প্রস্রাব কমায় বাসক পাতাঃ প্রস্রাব করার সময়ই
জ্বালাপোড়া করলে বাসক গাছের ফুল বেটে মিশরি সাথে শরবত করে খেলে এই রোগ ভালো
হয়।
- ঋতুস্রাবের সমস্যায় বাসক পাতাঃ অনিয়মিত ঋতুস্রাব ও পেটের ব্যথা কমাতে বাসক পাতা সেবন করুন। অতিরিক্ত রক্তপাত দূর করতে পারে।
-
বাতের ব্যথা উপশম করে বাসক পাতাঃ বাসক পাতা বাত ব্যথা উপশম করতে পারে।
কারণ অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে এই পাতায় যা ব্যথা কমাতে সাহায্য
করে। অল্প কিছু বাসক পাতা বেটে সাথে হলুদ ও চুন মিশিয়ে লাগালে ব্যাথাযুক্ত
স্থান ভালো হয়।
-
জন্ডিস নিরাময়ে বাসক পাতাঃ নিয়মিত বাসক পাতার রস খেলে সাধারণ মানুষের
জন্ডিস সাধারণত হয় না। জন্ডিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি নিয়মিত এই বাসক
পাতার রস সেবন করেন, তাহলে জন্ডিস ভালো হয়।
-
দাঁতের সমস্যায় বাসক পাতাঃ দাঁত ব্যথা বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে
বাসক পাতা পানির সাথে মিশিয়ে সিদ্ধ করুন। এরপর হালকা কুসুম পানি হলে
মুখে গড়গড়া করুন। নিয়মিত এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে দাঁত সুস্থ থাকে।
-
রক্ত পরিষ্কার করে বাসক পাতাঃ নিয়মিত বাসক পাতা সেবন করলে শরীরের
রক্তের যে কোন সমস্যা থেকে রক্ষা করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। বাসক পাতার নির্যাস রক্ত বিশুদ্ধ
করে এবং টক্সিন দূর করে।
-
অ্যালার্জির সমস্যায় বাসক পাতাঃ শরীরে বিভিন্ন রকমের চুলকানি ও মুখে
ব্রণের সমস্যা সাথে নানান অ্যালার্জি সমস্যা দূর করে। নিয়মিত সেবন করলে
শরীলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দেয় না। আর অ্যালার্জি হওয়ার পরও
ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ভালো হয়।
-
রক্তক্ষরণ বন্ধে বাসক পাতাঃ ক্ষত বা কাটা স্থানে বাসক পাতার রস লাগালে
রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। তৎক্ষণিক এই পাতার রস দিলে দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় এবং
শুকাতে সাহায্য করে।
- মাংসপেশির সমস্যায় বাসক পাতাঃ বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরে মাংসপেশির টান পড়ে যায়। যদি এই সমস্যাতে আপনি পড়েন তাহলে অবশ্যই বাসক পাতার রস মালিশ করুন। অথবা হলুদ, চুন ও বাসক পাতার রস একসঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ মালিশ করুন।
বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন এবং সাথে জেনে নিন
এই পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন অনেক, তবে
সর্দি কাশি কিংবা শ্বাস্তালীর ব্যাথা হলে যদি এই গাছের পাতার রস খাওয়া যায় অতি
দ্রুত গতিতে ভালো করে। প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিভিন্ন
রকম সর্দি জনিত রোগের চিকিৎসায়। সর্দি খুব দ্রুত ভালো করতে পারে এই বাসক
পাতার ব্যবহারের ফলে তবে এর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ঔষধি কাজে এই পাতা ব্যবহৃত হয়।
এই পাতার রস গোসল করার আধা ঘন্টা আগে মাথাই ভালোভাবে মালিশ করলে দ্রুত মাথার উকুন
মরে যায়। এছাড়াও আমবাত ও ফোড়ার প্রাথমিক অবস্থায় বাসক পাতা বেটে দিলে ফোড়া
ভালো হয় এবং সাথে সাথে ব্যথা উপশম হয়।
প্রসবের জ্বালাপোড়া সমস্যা থাকলে বাসক পাতার ফুল বেটে ২-৩ চামচ, সাথে মিশরি
মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে এই সমস্যা দূর হয়।
জন্ডিস ভালো করতে এই বাসক পাতার রস অত্যন্ত উপকারী। বাসক পাতা বা ফুলের রস ১-২
চামচ মধু বা চিনি সহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম
অত্যন্ত উপকারী বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম খুবই সহজ ও যেকোনো নিয়মে খেলে এই পাতা
থেকে উপকার পাওয়া যায় তবে যথাযথ উপকার পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অনুসরণ
করে খেতে হবে। নিয়ম অনুসরণ করে বাসক পাতা খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
তাই আসুন আমরা সঠিক নিয়ম জেনে নেই এবং এর থেকে যথাযথ উপকার নেয়।
বাসক পাতার রস করার পদ্ধতি জেনে নিন
- প্রথমেই বাসক পাতা সংগ্রহ করুন।
-
প্রাথমিক পর্যায়ে ১০-১৫ টি সতেজ-পাতা সংগ্রহ করুন।
-
পাতাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
-
এরপর ব্লেন্ডার দিয়ে অথবা যে কোন উপায়ে ব্লেন্ড করে নিন।
-
ব্লান্ড হয়ে গেলে ছাকনা দিয়ে ছেঁকে রস বের করে নিন।
-
এরপর এই রস প্রতিদিন খেতে পারেন ১-২ চা চামচ অথবা ৫ থেকে
১০ মিলিমিটার।
সর্দি জনিত সমস্যার জন্য বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম
- উপরের নিয়ম অনুসারে বাসক পাতার রস তৈরি করুন।
-
তারপর বাসক পাতার রসের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
-
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পদ্ধতি অনুসারে বাসক পাতা খেয়ে নিন।
দীর্ঘদিনের জমা কফ বের করার নিয়ম
- কয়েকটি পরিষ্কার বাসক পাতা সংগ্রহ করুন।
-
বাসক পাতার সাথে আদা মিশিয়ে চা বানিয়ে নিয়মিত পান করুন।
-
অথবা ফুটন্ত গরম পানি তে মধু এবং লেবু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
এছাড়া বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত বাসক পাতার রস খেলে সে রোগ দ্রুত ভালো
হয়। সাধারণত বাসক পাতার তেতো হওয়ার ফলে অধিক স্বাদ পেতে মধু ও চিনি মিশিয়ে
খান।
বাসক পাতার কোথায় পাবেন ?
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন কারণ বাসক পাতা
অনেকেই চেনেন না। বাসক পাতার এত এত উপকারিতা আমরা অনেকেই নিতে চাই তবে এই পাতার
সংগ্রহ কিছুটা কঠিন হয়ে পড়ে শহরের মানুষজনের জন্য। বাসক পাতা বাংলাদেশের অনেক
জায়গায় পাওয়া যায় তবে এটি সাধারণত আদ্র ও সমতল এলাকায় জন্মায়। বর্তমানে
বাসক পাতার চারা বিভিন্ন শহরে বিক্রয় হয়ে থাকে। বাংলাদেশের যে কোন
জায়গায় এছাড়া সহজেই বপন করা যায়।
বাসক গাছ গ্রামের রাস্তার ধারে ও বাড়ির আনাচে-কানাচে বিভিন্ন জায়গায় দেখা
যায়। এই উদ্ভিদটি সাধারণত বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়। বাসক গাছ ডাল থেকে
আরেকটি গাছ জন্মায়। বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে এই পাতা
বিক্রয় হয়। বিভিন্ন ভেষজ ওষুধের দোকানে এই পাতা পাওয়া যায়। আপনি চাইলে এই
পাতার সংগ্রহ করার পর তা রস বানিয়ে সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। অথবা বাসক
পাতার সিরাপ পাওয়া যায়।
বাসক পাতার পুষ্টিগুণ
পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে
খুবই প্রয়োজন। এক একজনের শারীরিক ধরন এক এক রকম তাই পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
জানা থাকলে কি পরিমান খাবেন, সেটা পরিমাপ করা যায়। তাই আসুন, বাসক পাতার
পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। প্রতি ১০০ গ্রাম বাসক পাতা পুষ্টিগুণ দেওয়া
হল।
- প্রোটিন= ৩.২ গ্রাম
- ক্যালোরি= ৫২ গ্রাম
- পানি= ৭১.২ গ্রাম
- আঁশ=৫.৯ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম= ১৭৫ গ্রাম
- আয়রন= ৩.২ গ্রাম
- সুগার=৪.১০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট=২৪ গ্রাম
- ফ্যাট=১.১ গ্রাম
- পটাশিয়াম= ৪৪৮ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম=২৭ মিলিগ্রাম
- জিংক= ১.২ মিলিগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ= ০.২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি= ২৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন এ=১০২ IU
বাসক পাতার চা এর উপকারিতা ও তৈরি নিয়ম
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন সাথে জেনে নিন বাসক
পাতার চা এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম। সর্দি-কাশি দ্রুত ভালো করতে বাসক পাতার
চা এর বিকল্প নাই। বাসক পাতার চাষ সর্দি কাশি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা
দূর করতে পারে খুব সহজে। যাদের দীর্ঘদিনের এই সর্দি-কাশির সমস্যা রয়েছে তারা
নিয়মিত বাসক পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এতে করে সর্দি কাশি উপশম
হবে এবং পুনর্বৃত্ত হবে না।
বাসক পাতার চা তৈরি নিয়ম
- প্রথমেই বাসক পাতা সংগ্রহ করুন (শুকনো অথবা তাজা)।
- এরপর ৪-৫ একটি তাজা পাতা সাথে ১-২ চা চামচ শুকনো পাতার গুঁড়ো নিন।
-
পরিমান মত গরম পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
-
পানি ভালোভাবে ফোটানোর পর ছেকে নিন।
- এরপর চায়ের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
এভাবে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বাসক পাতা এর চা খেলে অত্যন্ত উপকারিতা পাওয়া
যায়। দিনের অন্যান্য সময়ও এই চা খাওয়া যায়।
বাসক পাতার সিরাপ এর উপকারিতা
বাসক পাতা সংগ্রহ করতে না পারার কারণে অনেকে বাসক পাতার সিরাপ সেবন করেন। একটি
বাজারজাত করে থাকেন "Hamdard Laboratories Limited"। বাসক পাতার সেরা
বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের সংমিশ্রণে তৈরি। এই সিরাপ এর প্রধান উপকারিতা
হল-সর্দি, কাশি, জমে থাকা কফ, শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ নিরসনে
অত্যন্ত কার্যকরী। বাসক পাতার সিরাপ পুরনো সর্দি কাশি দূর করতে অত্যন্ত
উপকারী।
এই সিরাপ অ্যাজমা রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী। যেমন শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগীর
ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকর। শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ ও গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য
করে। ভাইরাস জনিত জ্বর ছাড়াতে এই সিরাপ ব্যবহার করা হয়। এই সিরাপ
কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যার দূর করে ও পেটের বদহজম ভালো হয়। এই সিরাপ অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত।
বাসক পাতার সতর্কতা
বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন সাথে সতর্কতা
সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিভিন্ন অসচেতন জন্য বিপদে পড়তে হতে
পারে। বাসক পাতার সামান্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আসেন আমরা জেনে
নেয়, বাসক পাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা।
শিশুদের ক্ষেত্রেঃ শিশুদের ক্ষেত্রে বাসক পাতার রস অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রেঃ গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে বাসক পাতা ব্যবহার
একেবারেই উচিত নয়। যদি একান্ত ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ
নিন।
অতিরিক্ত বাসক পাতা সেবন করা থেকে বিরত থাকুন। বাসক পাতা খাওয়ার পর শারীরিক
সমস্যা দেখা দিলে, এই পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
বাসক পাতার অপকারিতা
সাধারণত বাসক পাতার তেমন কোন উপকারিতা থাকে না। আপনি যদি যথাযথ নিয়ম জেনে এই
বাতাস খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই উপকার পাবেন। তবে প্রতিটা জিনিসের উপকারিতা থাকলে
অপকারিতা অবশ্যই থাকে। হাজারো গুণে গুণান্বিত বাসক পাতার, কিছু সামান্য
অপকারিতা জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। যে অপকারিতা গুলো যেকোন মানুষের ক্ষেত্রে হতে
পারে। তাই আসুন জেনে নেই এই পাতার অপকারিতা।
সাধারণত যে সকল সমস্যা হয় সেগুলো নিম্নে দেওয়া হল
- বমি বমি ভাব হতে পারে।
- কোন কোন সময় বমি হতে পারে।
- ডায়রিয়া হতে পারে।
- পেট ব্যথা হতে পারে।
-
মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরার মত সমস্যা হতে পারে।
- রক্তচাপ কমাতে পারে।
-
বিভিন্ন এলার্জির সমস্যা হতে পারে। যেমন-চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্টর মত
সমস্যা হয়।
যদি এই সকল সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে অবশ্যই বাসক পাতা খাওয়া বন্ধ করে
দিন।
উপসংহারঃ বাসক পাতার ১৫টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কোথায় পাবেন ? জানুন
বাসক পাতা থেকে উপকারিতা আমরা সকলেই নিতে চাই, কিন্তু এই বাসক পাতা থেকে যথাযথ
উপকার পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। সেই নিয়ম অনুযায়ী
এটি ব্যবহার করলে বা সেবন করলে অত্যন্ত উপকারের পাওয়া যায়। শুধু শ্বাসকষ্ট
বা সর্দি-জনিত সমস্যায় এই ভেষজ উদ্ভিদটি ব্যবহার করা হয় না। বরং মানুষের
কল্যাণে বিভিন্ন প্রয়োজনে এই পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকে।
এই আর্টিকেলটিতে বাসক পাতা সম্পর্কে বাসক গাছ সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা
করা হয়েছে এবং এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম বা কোথায় পাবেন সম্পূর্ণ বিস্তারিত
দেওয়া হয়েছে। অবশ্যই এর সতর্কতা জানা অত্যন্ত জরুরি ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
সম্পর্কে জানা জরুর এ সমস্ত বিষয় নিয়ে এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। আশা
করি সম্পূর্ণ পড়ে এই বাসক পাতা থেকে যথাযথ উপকার নিবেন। ধন্যবাদ



ইজনাির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url